পদ্মা সেতু, বাংলাদেশে নির্মিত একটি প্রধান অবকাঠামো প্রকল্প, যা পদ্মা নদীর উপর নির্মিত। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম। পদ্মা সেতু সংক্রান্ত সাধারণ জ্ঞানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো:
প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ:
- অবস্থান: মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া থেকে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা পর্যন্ত বিস্তৃত।
- প্রকার: এটি একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু।
- দৈর্ঘ্য: 6.15 কিলোমিটার (প্রায় 3.82 মাইল)।
- প্রস্থ: 18.10 মিটার।
- খরচ: আনুমানিক ৩.৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০১৫ সালের মূল্যায়ন অনুযায়ী)।
- ফাউন্ডেশন: গভীর পাইল ফাউন্ডেশন।
নির্মাণ ও পরিকল্পনা:
- প্রকল্প শুরুর তারিখ: আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে।
- সম্পন্নকরণের তারিখ: ২০২২ সালের জুন মাসে সেতুটি সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
- নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান: মূল নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (MBEC)।
গুরুত্ব:
- অর্থনৈতিক উন্নয়ন: সেতুটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য অঞ্চলের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করেছে, যা বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।
- ভ্রমণ সময়ের হ্রাস: সেতুটি নদী পারাপারে সময় কমিয়ে এনে দ্রুত যাতায়াতের সুবিধা প্রদান করছে।
- সমাজ ও সংস্কৃতি: দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চ্যালেঞ্জ ও সমাধান:
- কারিগরি চ্যালেঞ্জ: পদ্মা নদীর গভীরতা ও স্রোতের গতি বিবেচনা করে ফাউন্ডেশন স্থাপন একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
- অর্থায়ন: শুরুতে কিছু আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী সংস্থা সমস্যায় পড়লেও, শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রকল্পটি সম্পন্ন করে।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছে।
